মোহাম্মদ হোসেন, হাটহাজারী:
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দু’দলেই হেভিওয়েট প্রার্থী থাকার পরও শেষ পর্যন্ত দু’দলেরই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গলার কাঁটা হয়েছেন জোট-মহাজোটের প্রার্থীরা। এখানে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়েছে কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন। চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে হাটহাজারী বিএনপিকে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ভোটের মাঠে একেবারেই নতুন এ প্রার্থীকে নিয়ে টেনশনে আছেন স্থানীয় নেতারা।এই আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী নেই। প্রায় গত ১০ বছর এ আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পাটির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। মহাজোট ও ২০ দলীয় জোট থেকে দুই জন হেভিওয়েট প্রার্থী সুযোগ পেয়েছেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনি। দুই দলের নেতাকর্মীরা হাই কমান্ডের নির্দেশ মেনে প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

এ দিকে প্রতিক পাওয়ার পর সরকার বিরোধী প্রধান দল বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থীরাও বসে নেই। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় সরকার বিরোধী এসব প্রার্থীও সরকার সমর্থক প্রার্থীদের সঙ্গে সমানতালে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানকার মানুষের মধ্যে নেই কোনো ভোটের আামেজ। চায়ের দোকান, কাপড়ের দোকান,অটোরিক্সা চালক-রাস্তাঘাটের সাধারণ মানুষ কারো মধ্যে প্রকাশ্যে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আলোচনা নেই। কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম এর কাছে জানতে চেয়েছিলাম এবারের নির্বাচনে কোন বিষয় গুলো তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ? তিনি বলছিলেন “অতীতের নির্বাচনগুলো দেখে মনে হয়েছে এবারে প্রতিটা মানুষ একটা সুষ্ঠু ভোটের কথা বলছে। তাদের মনে কী আছে সেটা পরিষ্কার করে বলে না। রাজনীতিবিদ খোরশেদ আলম কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুটা দ্বিধাদ্বন্ধ নিয়ে বলছিলেন “যে প্রার্থী আসুক তার কাছে আমাদের চাওয়া হাটহাজারীটা যাতে উন্নতি করে। কারণ আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা খুব খারাপ”।

হাটহাজারী পৌর সদরে গৃহিণী নিলু সেন জানান, আগামীতে যারাই সরকার গঠন করবেন সেই সরকার যেনো নারী ও শিশুবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন এবং হাটহাজারীতে গবেষণাধর্মী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি ও নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উদ্যোগী হোন। হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের ছাত্রী শাহিন আক্তার নতুন ভোটার। আনন্দ নিয়েই ভোট দিবেন। আর আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে তাদের কাছে তার প্রত্যাশা, তথ্য-প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার চলমান অবস্থার উন্নয়ন এবং গ্রামে শিক্ষার অবকাঠামো তৈরির ওপর জোর দিতে হবে।

এ দিকে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বধীন মহাজোট এর বর্তমান এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এ আসনের প্রাথী। অন্যদিকে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট থেকে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান মেজর জোনারেল(অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইববারাহিম বীর প্রতীক। এ ছাড়া বাংলাদেশ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নঈমুল ইসলামের ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। তবে ভোট যুদ্ধ হবে মহাজোট আর ২০দলীয় জোটের মধ্যে।